বাংলার প্রকৃতি যেন রুপের মহিমায় মহীমান্বিত আর এই রুপের আলো ছড়ানোর অলংকার স্বর্নতূল্য সুন্দরবন । যার প্রকৃতির বৈচিত্র্যময় রুপের আচ্ছাদন ও চিরায়ত সবুজের প্রকাশতা ঠিক রেখেছে সমগ্র বাংলাদেশের ইকোসিস্টেম ও পরিবেশকে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনের খেতাব আর পশুপাখি ও গাছপালার মেলবন্ধনের পরিব্যাপ্তির প্রয়াস এই বন। যা দীপ্ততার সাথে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে পরিচিত করে রুপকথার স্বপ্নিল দেশ হিসাবে।
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হুংকার, উদ্ভিদ ও প্রানী জগৎ এর বিচরন মেলা, মৌমাছির চাকে মধুর আনাগোনার দৃশ্যপট, সবুজের আলপনায় সাজানো এই বনের চিত্তময় প্রেক্ষাপট।
সুন্দরবন বিহীন বাংলাদেশ যেন স্বর্নমুকুট ছাড়া রাজার সমতূল্য। দুর্যোগ কালীন সময়ে মূল প্রতিপক্ষই যেন সুন্দরবন। নিজের হৃদয়কে উৎর্সগ করে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার প্রতয়ে নিজ প্রান বলি দেয় এই নিস্বার্থে সর্বপরিসরে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুন্দরবন একটি অপরির্হায সম্পদ যাকে মূল্য দিয়ে যাচাই করা অযাচিত।
সুন্দরবনের সৃষ্টিবিবরনের ইতিহাস
সুন্দরবনের ইতিহাসকে পর্যাআলোচনা করলে পাওয়া যায় এর উদঘাটন মূলত প্রায় ২০০-৩০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। চন্দ্র সাগর নামক এক রাজার দ্বারা নির্মিত শহরের ধংস্বস্তূপ পরিচিতি পায় বাগমারা নামক বনাঞ্চলের বিভাগ হিসাবে যাই মূলত সুন্দরবন।
যার দরুন সুন্দরবন চন্দ্রনাথ বন নামেও পরিচিত ছিল।রুপবদলের পালাক্রমে মুঘলদের আদলে সকল ধরনের মৌলিক পরির্বতনের ধারায় সুগঠিত হয় সুবিশাল ম্যানগ্রোভ এই বন।
এই জঙ্গল তার নিজ প্রকৃতির আদলে বৃক্ষরাজির বিকাশ ও পশুপাখির অভয়ারণ্যেতে পরিনত হয়ে নিজের বিশালতাকে ছাড়িয়ে বিস্তৃতি লাভ করে। মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম সম্রাট আকবরের অকুতোভয় সৈনিক এর দরুন অনেকে আশ্রয় নেয় এই বনে।
সেই থেকে এই বনের আশেপাশে মানুষের বসবাস। মুঘল আমলের দ্বিতীয় কর্নধর আলমগীর এর সম্মতি সাপেক্ষে জরিপকারী জেনারেল কর্তিক পার্সিয়ানরা সর্ব প্রথম সুন্দরবনের মানচিত্র তৈরী করে।
মুঘল সম্রাট আলমগীর কতৃক অধিকারত্ব পাওয়ার পরই ব্রিটিশ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী সুন্দরবনকে পরিপূর্ণ মানচিত্রের আওতায় আনে ১৭৫৭ সালে।
তৎকালীন সময় ভারতের বাংলা প্রদেশে বন বিভাগের কার্যক্রম ১৮৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সুন্দরবনকে বাংলাদেশের বন বিভাগের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নের ভূবণ গ্রীনল্যান্ড এর আত্ম পরিচিতি
সেই সময়ে সুন্দরবন ছিল তার আয়তনের তুলনায় প্রায় দুই গুন বড়। যতই সময় পরির্বতিত হয় ততই মানুষের ঘনত্ব ও চাহিদা বাড়ে যার ফলে সুন্দরবনের আয়তন ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
সুন্দরবনের সকল এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে বিবেচনায় আসে ১৮৭৮ সালে। বন ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন অধিদপ্তর স্থাপিত হয় বাংলাদেশের খুলনা জেলায় ১৮৭৯ সালে।
বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ এই ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল ট্রাক এন্ড ওয়েস্ট ল্যান্ড হিসাবে পরিচয় পায় ১৯১১ সালে। ভারত মহাদেশ বিভক্ত হয় ১৯৪৭ সালে সৃষ্টি হয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুইটি রাষ্ট্র তখন সুন্দরবনের ৪৪ শতাংশের মতো চলে যায় ভারতে।
বাকি ৬০ শতাংশ থাকে পূর্বপাকিস্তানে যা পূর্বপাকিস্তানের ৪.২% ধারন করে। সুদুর প্রসারি এই বন ভারতের হুগলি নদী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের যমুনা নদীর অববাহিকা পর্যন্ত প্রায় ১৬০০০ বর্গকিলোমিটার বেশি বা ১৬৫ মিটার প্রসারি।
যার পরিসরের ব্যাপ্তিতা খুলনা,বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও ভারতের চব্বিশপরাগনা পর্যন্ত।
ভৌগোলিক গঠন ও অবস্থান
পৃথিবীর এই দৃষ্টিনন্দিত ও সুবিশাল পরিসরের রহস্যময়ী বনের ৬০% এর বেশি বাংলাদেশে ও ৪০% ভারতে অন্তর্ভুক্ত। সুন্দরবন যেন গঙ্গা, হুগলি, পদ্না,ব্রম্মপুত্র ও মেঘনার প্রাচীর ঘেষে দক্ষিণ বাংলাদেশ সহ সুবিশাল আকারে নিজের পরিধি ব্যাপ্ত করেছে।
ষোল হাজার নয়শত বর্গকিলোমিটারের এই বন তার পরিধিকে সংকুচিত করে বর্তমানে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার। যার মধ্য বাংলাদেশে ৪১১০ বর্গকিলোমিটার এবং বাকি অংশ ভারেতর অধীনে।
এই বনের পূর্বে বলেশ্বর ও পচ্চিমে হাড়িয়া ভাঙ্গা নদের মধ্যবর্তি জায়গায় বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ পচ্শিমে অবস্থিত। এই বৈচিত্র্যময় বনভূমি দুইবার জোয়ার ভাটায় প্লাবিত হয়।
তিনটি ভৌগোলিক অভয়ারণ্য বিদ্যমান এই পালভূমিতে। সুন্দরবনে সাধারনত স্বাদু বা মিষ্টি পানি আর লবণাক্ত পানির প্রাদুভাব পরিলক্ষিত। লবনাক্ত পানির লবণাক্ততা নির্ভর করে ঋতুভেদে।
শীতকালে লবণাক্ততা বেশি ও বর্ষায় কম দেখা যায়। খুলনা বিভাগের আওতায় দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের তীরে সমুদ্র পৃষ্ঠের গড় উচ্চতা থেকে সুন্দরবনের সমতল ভূমি ০.৯ থেকে ২.১১ মিটার উচু।
ভূমি সংকোচন
সুবিশাল ও সৌন্দর্যের রহস্য ঘেরা এই বন ছিল ১৬৯০০ বর্গকিলোমিটার যা বাংলাদেশের বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশকে সঠিক রাখার গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক।
বর্তমানে বননিধন,রুপৈবচিত্রের উপর বিরুপ আচারন, জনসংখ্যা ও মানুষের মৌলিক চাহিদার কেন্দ্রবিন্দুতে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে আগের তুলনায় প্রায় তিন গুন।
যার বর্তমান আয়তন ৪১৪৩ বর্গকিলোমিটার এর মধ্য জলাভূমি ১৮৭৪ বর্গকিলোমিটার। এই ভাবে সুন্দরবনের প্রতি উদাসীনতা ও পর্রিচযা কমতে থাকলে হয়তবা নিঃশ্বেষ হয়ে যাবে বাংলার এই হিরক।
নানা উদ্ভিদের বিচরন ক্ষেত্র
সুন্দরবন নামের পরিচয়ই পরিফুষ্ঠিত হয় উদ্ভিদের নামের উপর কেন্দ্র করে। সুন্দরী (Heritiera fomes ) নামক গাছের পরিব্যাপ্তিই এই বনকে আখ্যায়িত করেছে সুন্দরবন নামে।
নানা প্রজাতি ও রঙের উদ্ভিদের আপনমনে গড়ে ওঠার পরিপক্কতার মাধ্যমই সুন্দরবন। এই বনের রহস্যলীলায় বেড়ে উঠেছে প্রায় ২৪৫ টি শ্রেনী ও ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ ১৯০৩ সালের জরিপ অনুযায়ী।
সুন্দরী গাছের পাশাপাশি গেওয়া,শাল,গরান, খলসি, তোরা, গর্জন সহ অপ্রতুল গাছের চিরায়ত ধারক সুন্দরবন। নদী ও খালের পাশ্ববর্তি এলাকায় পালভূমি সমৃদ্ধ অঞ্চলে জন্মায় কেওড়া যা চিত্রা হরিণের অন্যতম বিচরন ক্ষেত্র।
সুন্দরবনের মহিমায় গড়ে ওঠা হেতাল ঝাড়, পরশ, গোলপাতার ঝাড় ও হেদো যেন বাঘের জন্য তৈরীকৃত বসতবাড়ীর মতো। বনলেবু, হরগোজা,ওরাধান যেন এই বনের প্রাচীন সদস্য।
বননিধন ও জনসংখ্যার চাহিদার কেন্দ্রবিন্ধুতে টিকে থাকার লড়াইয়ে সুন্দরবনের উদ্ভিদগুলো যেন অসহায়, তাইতো তারা হেটে যাচ্ছে বিলুপ্তির ধারায়। আমাদের সকলকেই সুন্দরবনের উদ্ভিদরাজিকে বাচিয়ে রাখার প্রয়াসে অন্যবদ্য হওয়া জরুরী।
প্রানী জগৎ এর বৈচিত্র্যমেলা ও অভয়আশ্রম
জানা অজানা সকল প্রানীবৈচিত্র্যর অদ্ভুত এক মেলবন্ধন খুজে পাওয়া যায় এই সুন্দরবনে। বনের মাদুর্যই যেন প্রানীর মিলনমেলা বনকে সৌন্দর্যের প্রতিকৃতি করার রুপরেখা এই প্রানীজগতকে কেন্দ্র করে।
রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর গর্জনই প্রানবন্ত প্রজ্বলিত করে এই বনকে। দশ থেকে পনেরো হাজার চিত্রা হরিণের আভাসস্থল এই সুন্দরবন।
প্রানীর রহস্যময়তার চাদরে সমাদৃত এই বনে মিশে আছে প্রায় ৩২ প্রজাতির স্তন্যপায়ীর কারসাজি, ৩৫ জাতের সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর ও ৩২০ প্রজাতির আবাসিক ও পরাযায়ী পাখির সমাহার।
সুন্দরবনের প্রানীদের টিকে থাকার মিছিলের দুইটি শর্ত সাতাঁর আর উড়তে পারা যেন মৌলিকতা, তা না হলে বনে টিকে থাকতে পারে না। সুন্দি কাছিম, বানর, বন্যশুকর, গিরগিটি, উদ্বিবিড়াল যেন আপন স্বাধীনতা খুজে পায় এই বনে।
মায়াহরিন, রঙবেরঙের প্রজাপতি ও গুইসাপের তালমাতালি যেন সুন্দরবনের অহংকার। কল্পনার বাগানের হাজারো পাখির স্বর্গরাজ্য বলে আ্যাখায়িত সুন্দরবন।
এক বিংশ শতাব্দী জুড়ে প্রকৃতির সাথে মিশে আছে পানির রাজা স্বাদু ও লোনাপানির মেছো ও মোহনার কুমির। সাদা ডলফিনের নৃত্যরুপ সুন্দরবনেই দেখা যায়। জাভাদেশীয় ও ভারতীয় গন্ডার, বুনোমহিষ সৌন্দর্য ছড়ায় আপন মনে।
প্রনীজগৎ এর অভয়আশ্রম হিসাবে প্রানীকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াসে এক অবিস্মরণীয় ভূমিকা রাখে সুন্দরবন। সুন্দরবনের প্রতি উদাসীনতা ও নানাবিধ সমস্যার দরুন অনেক প্রানী টিকিয়ে রাখতে পারছে না তার বংশধারাকে।
বাংলাদেশের প্রনীকূলকে বাঁচাতে চাইলে সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে। সুন্দরবনের দীপ্তময় আভাসস্থল ছাড়া প্রানীগুলো শূন্যে মরুভূমির মরিচীকা স্বরুপ।
ম্যানগ্রোভ বনের কর্নধার
সকলধরনের বন থেকে সুন্দরবনের বৈশিষ্ট্য ও পথচলা একটু ভিন্নতর তাই পরিচয় পেয়েছে ম্যানগ্রোভ বন হিসাবে। ম্যানগ্রোভ বনের অর্থ হলো লবনাক্ত পানির মধ্য জন্মানো উদ্ভিদের বন।
আর সুন্দরবন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনের সম্রাজ্য। এই বনের উদ্ভিদের অন্যতম পরিচয় হলো অক্সিজেনের জন্য শ্বাসমূল অর্থাৎ নিউমাটোফোর বিদ্যমান।
তাছাড়াও এদের মধ্য বিদ্যমান রয়েছে লবণাক্ততা কাটানোর বিস্ময়কর সহনশীলতা। সুন্দরবনের উদ্ভিদ গুলো প্রতিদিন দুইবার জোয়ারে প্লাবিত হয় তাই পরিবেশের সাথে টিকে থাকার জন্য রয়েছে বীজের অঙ্কুরোদগমন ক্ষমতা।
বীজ গুলো সূচালো হওয়ায় তা পানিতে ভেসে যায় না। মহীয়সী এই বন ১৯৯২ সালে রামসার সাইটের অন্তর্ভুক্ত হয়। ভিন্নতর বৈশিষ্ট্যর কর্নধার হওয়ায় ১৯৯৯ সালে সুন্দরবন ওর্য়াড হ্যারিটেজ সাইট এর অন্তর্ভুক্ত হয়।
বাঘের রাজ্য সুন্দরবন
সুন্দরবন তার নিজের রুপকে সাজিয়েছে বাঘের প্রাচুর্য দিয়েই। একসাথে এত বাঘের বসবাস একটি বনে যেন ইতিহাসে বিরল। সুন্দরবনের বাঘগুলোর বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য মন কারে সকল মানুষের।
২০০৪ সালের জরিপ মতে সুন্দরবনের আদলে রঙের আচ্ছাদন ছড়ায় প্রায় ৫০০ এর মতো বাঘ। বাঘের বিলুপ্তর অন্যতম কারন মানুষ্যজনিত ১৯৮১ থেকে মানুষের হাতে মারা গেছে অর্ধশতাধিক বাঘ।
বাঘের বিলুপ্তির ক্রমধারায় বন বিভাগের ক্যামেরার রির্পোট অনুসারে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ১০৬ টি বাঘের সন্ধান পাওয়া যায়। পরিসংখ্যান মতে ১১৪ টি বাঘ বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আর ৮৪ টি ভারতের ভূখন্ডে রয়েছে।
মৎস্য সম্পদের আধার
সুন্দরবন সাজানো স্বপ্নের বেড়াজালের মতো আকাবাকা নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাভূমি দিয়ে। আর এই জলাভূমি নিজের রঙ ছড়িয়েছে নানা প্রজাতির মাছ দিয়ে।
প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ দ্বারা প্রসিদ্ধ এই সুন্দরবন। প্রায় ১২০ প্রজাতির বানিজ্যিক মাছ দেশের অর্থনিতী ও মাছের চাহিদা পুরনে অদ্ভুতপূর্ন ভূমিকা রাখে।
শিড়দারওয়ালা মাছ,কাকড়া ও চিংড়ির আলপনা,ডলফিনের লাফ প্রানবন্ত করে সুন্দরবনকে। নদীর লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ময়লা আর্বজনা, বিষপ্রোয়োগ ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুন্দরবন থেকে বিলুপ্তির শেষ পর্যায়ে হুমকির মুখে অনেক মাছ।
অর্থনিতীর সহায়িকা
যে কোন দেশের অর্থনিতীর এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে বনাঞ্চল সুন্দরবনের মতো দীপ্তোজ্জ্বল ম্যানগ্রোভ বন যেন তারই স্বাক্ষর রাখে।
সুন্দরবনের কাঠ, গোলপাতা, বাঁশ বাংলাদেশের মানুষের জ্বালানি ও মৌলিক চাহিদা পুরনের অন্যতম ভিত্তি। পর্যটকদের কাছে রুপকথার রাজ্যই যেন সুন্দরবন যা পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে দেশের অর্থনিতীকে রেখেছে অনড়।
সুন্দরবনের আদলে জড়িত ৪০ লক্ষ্য মানুষের জীবন জীবিকা। মৎস্য সম্পদের আভাস স্থল, মৌমাছির চাকে অর্থের ফুলঝুরি ও অন্যান্য সম্পদের রহস্যগাথা এই বন মানুষের জীবিকার চাহিদা পুরনের স্বপ্ন দিয়ে আঁকা।
সবদিক বিবেচনায় সুন্দরবন হলো বাংলাদেশের নিঃস্বার্থে চলমান অর্থনিতীর চাকা।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুপ প্রভাব
সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকা সংলগ্ন অঞ্চলেই প্রকল্প নেওয়া হয় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করার। যা মূলত কযলা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
সুন্দরবনের ভূমি সংকোচন, প্রানী ও উদ্ভিদের বিলুপ্ততা বেড়েই চলেছে পরিবেশবিদদের মতে রামপাল প্রকল্পটি এই আগ্রাসনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সবুজ শ্যামলীতে ভরপুর প্রানী ও উদ্ভিদ রাজির কথা ভেবে ২০১২ সালে রামসার ও ইউনেস্কো সংশয় প্রকাশ করেছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিষ্কাশিত ছাই এর সালফার ডাই অক্সাইড বিলুপ্ত করবে উদ্ভিদরাজিকে।
এসিডের বিষাক্ততায় নষ্ট হবে ভূমি উৎপাদন ক্ষমতা, পরিবেশ দূষন ও পশুর নদীর নাব্যতা সংকট প্রকটতা ধারন করবে। বন সংরক্ষক সরকারের ২০১১ সালের তথ্য মতে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাঘ ও জীববৈচিত্র্যের পরিব্যপ্তিতা হ্রাস পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারন।
বিদ্যুৎ এর প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা সুন্দরবনের সাপেক্ষে তুচ্ছহীন এই অমূল্য রত্নকে বাঁচাতে হলে ত্যাগ করতে হবে সকল স্বার্থকে।
দূর্যোগ মোকাবিলার প্রধান ভরসা
বাংলাদেশ মূলত দূর্যোগ প্রবন দেশ প্রায় প্রতিবছরই বঙ্গোপসাগর থেকে সৃষ্টি হয় প্রলংঙ্কারী সাইক্লোন ও নিন্মচাপ। সুন্দরবনের সাথে মূলত প্রথম সাক্ষাৎ হয় এই সাইক্লোন গুলোর।
নিজের হৃদপিণ্ডকে উজাড় করে সবটুকু দিয়ে দাবিয়ে রাখে শক্তিপ্রবন সাইক্লোনের বেগকে রক্ষা করে বাংলাদেশেকে। সিডর, আইলা,মহসিন, ফনি সহ বড় বড় দূর্যোগে নিজেকে বিলিয়ে আঁকড়ে ধরেছে দেশকে পালন করেছে অগ্রনী ভূমিকা।
দূর্যোগের ভরসার কথা বিবেচনায় এনেও সুন্দরবনের প্রতি নজর দেওয়া জরুরী।
বাংলাদেশের ফুসফুসের সমতূল্য সুন্দরবন। ফুসফুস ব্যতিত যেমন শ্বাসপ্রশ্বাস চলে না, তেমনি সুন্দরবন বিহীন বাংলাদেশও পরিপূর্ণতা পায় না। বাস্তুতন্ত্র, পরিবেশ,অর্থনিতী ও এর অন্যতম উৎস এই বৈচিত্র্যময়ী বন।
বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন খুঁজে মহীয়সী এই বনের আদলে। বিশ্বের ভ্রমনপ্রিয় মানুষের কল্পনার শীর্ষে এই বনাঞ্চল।
সুন্দরবনের প্রতি উদাসীনতা ও নজরদারির অভাবে যখন বিনষ্টি হবে তার উপস্থিতি, তখন বড় বড় সাইক্লোনগুলো হেঁসে হেঁসে বলবে প্রতিদন্ধী নেই এখন বাংলাদেশেকে কে বাঁচাবে।
সুন্দর বাঁচলে বাঁচবে দেশ এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে সুন্দরবনকে বাঁচানোর প্রয়াসে সকলকে উজ্জীবিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া
It’s going to be finish of mine day, however before end
I am reading this fantastic piece of writing to improve my knowledge.