ক্রিটিক্যাল থিংকিং হলো কঠোর এবং নিয়মশৃঙ্খল ভাবে চিন্তা করার সক্ষমতা যা কোন কিছুর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সিধান্ত গ্রহন, নির্ধারণ এবং পরিস্কার ধারনা অর্জন করা যায়। আমরা সবসময় আমাদের নিজের মতামতের ওপর আবেগী হয়ে উঠি। আমরা অন্যের কথায় তেমন গুরুত্ব দিতে চাই না। ক্রিটিক্যাল থিংকার হতে হলে আমাদের অবশ্যই অন্যের মতামতের ওপর দৃষ্টিপাত করতে হবে। তাদের কথার গুরুত্ব উপলব্ধি করে তারা কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন তা বিশ্লেষণ করতে হবে।
ক্রিটিক্যাল থিংকিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুনে খুব জটিল মনে হলেও এটা অতটা জটিল নয়। কিছু সহজ কৌশলে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন ক্রিটিক্যাল থিংকার।
সবকিছুর পিছনে কারন খুঁজতে শুরু করুনঃ
Photo by: Tech. Sgt. Ryan Crane
ক্রিটিক্যাল থিংকার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই “কেন” দ্বারা প্রশ্ন করতে জানতে হবে। কোনোকিছু কি কারনে ঘটছে কিংবা কেনই বা হলো এসব কিছু কৌতূহলী মনে জানতে হবে। আপনি প্রশ্ন করছেন কারন আপনি জানতে চান এর মানে এই নয় যে আপনি অন্যকে পরীক্ষা করার জন্য প্রশ্ন করছেন।
কোন কিছু গভীর ভাবে বুঝতে হলে অবশ্যই আপনাকে এর পিছনে কারন খুঁজতে হবে। আপনাকে প্রশ্ন করতে জানতে হবে। “কেন” দ্বারা প্রশ্ন করা একজন ক্রিটিক্যাল থিংকার হয়ে উঠার লক্ষণ। ছোট ছোট বিষয়ে যখন আপনি কারন খুঁজে পাবেন দেখবেন পুরো বিষয়টি আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করেছেন। যখন পুরো বিষয়টির কারন এবং কিভাবে কাজ করে জেনে যাবেন তখনি আপনার মধ্যে সৃষ্টিশীলতা চলে আসবে। তাই কোন কিছুর শুধু বিষয়বস্তু না জেনে কারন অনুসন্ধান করতে শুরু করুন।
ক্রিটিক্যাল থিংকিং এ পরিনতির দিকে বেশি মনোযোগী হোনঃ
ক্রিটিক্যাল থিংকিং এর মূল চাবিকাঠি হচ্ছে কোনোকিছুর পরিনতির দিকে বেশি নজর দেয়া। কি সিধান্ত নিলে কি ফলাফল আসছে তা গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করা। আপনি হয় তো স্বাভাবিক ভাবে কোন কিছু চিন্তা করতে করতে আটকে যেতে পারেন। কিন্তু ক্রিটিক্যাল থিংকিং এ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পরিনতি বা ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে চিন্তা করা আপনার সৃজনশীলতা বাড়িয়ে দিবে। আরও বেশি সৃষ্টিশীল হয়ে উঠবেন। চারিদিকের বাঁধা আরও সহজ হয়ে উঠবে। নিচের কিছু প্রশ্ন সবসময় ব্যবহার করুন –
- কি হবে যদি এটা করা হয় অথবা এটা না করলে কি হবে ফলাফল ?
- আমরা যদি এই পথ বেঁছে নেই তাহলে কি ভালো কিছু হারাবো ?
- অন্য কি ফলাফল আসতে পারে যদি এটা ঘটে ?
অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুনঃ
ক্রিটিক্যাল থিংকার হতে হলে অবশ্যই অন্যের কথায় গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। অন্য কেউ কোন দৃষ্টিকোণে ভাবছে তা আপনাকে বিশ্লেষণ করতে হবে। অন্যের কথা আপনার মন মতো হলো না বলে আবেগী হয়ে উঠবেন না। তার সাথে তর্কে চলে যাবেন না।
আরও পড়ুনঃ
খান একাডেমি –অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধির কৌশল সমূহ
প্রকৃতিগতভাবে মানুষ ভালো লিচেনার নয়। আমরা অন্যের মতামত অনেকক্ষেত্রেই পছন্দ করি না। তাই একজন ভালো শ্রোতা হয়ে উঠতে গেলে কিছু অনুশীলন প্রয়োজন। আপনি যখন অন্যের কথায় গুরুত্ব দিচ্ছেন তখনি অন্যরা আপনার কথায় গুরুত্ব দিতে শুরু করবে। তাই অন্যের মতামত ধৈর্য্য ধারন করে শোনা উচিত।
যারা ক্রিটিক্যাল থিংকার নয় তারা সহজেই আবেগী হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে ক্রিটিক্যাল থিংকারা অন্যের কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শোনেন। অন্যের চিন্তাধারা থেকেও ভালো কিছু আসতে পারে। সেগুলোকে বিশ্লেষণ করলে হয়তো ভালো কিছু ধারনা পেতে পারেন।
ছবিঃ সংগৃহীত
তথ্যসুত্রঃ www.monkeypuzzletraining.co.uk