আমাদের পৃথিবী প্রতিনিয়ত আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আর আমরাও তার হাত ধরে হেটে চলেছি দ্রুত গতিতে। প্রযুক্তি ছাড়া আমরা আমাদের জীবনকে কল্পনাও করতে পারি না। প্রযুক্তিরই এক অনন্য অবদান ওয়াই-ফাই। উঠতে বসতে আমরা প্রতিমুহূর্তে পরিচিত হচ্ছি এর সাথে। বলতে গেলে শহরের প্রতিটি বাসা বাড়িতেই রয়েছে এখন ওয়াই-ফাই সংযোগ।
গ্রামের দিকেও দিনেদিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে এর জনপ্রিয়তা। আমাদের মোবাইল ফোন, কম্পিউটারে সবসময়ই থাকে এখন ওয়াই-ফাই সংযোগ। আমাদের প্রয়োজন না থাকলে যে সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত তা আমাদের মাথায়ই আসে না। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময়ও আমরা অনেকে এ সংযোগ বন্ধ করি না। ফলে চলতে থাকে অবিরাম রেডিয়েশন।
সম্প্রতি একদল নবম শ্রেনীর ছাত্রছাত্রী ওয়াই-ফাইয়ের ক্ষতিকর প্রভাব বুঝার জন্য ৪০০ রকমের শাকের বীজের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছে। তারা ৬ টি ট্রেতে ২ টি আলাদা রুমে একই তাপমাত্রা, জল আর সূর্যালোক দেয় ১২ দিন ধরে। এর ভীতর ২টি ওয়াইফাই রাউটারের কাছাকাছি ৬ টি ট্রে রাখা হয়েছিল।
১২ দিন পর দেখা গেল রাউটারের কাছাকাছি রাখা শাকের বীজ মোটেই বড় হয়নি বরং অনেক বীজই শুকিয়ে গেছে। প্রধান কারণ হলো ওয়াইফাইয়ের বিকিরণ। যা প্রাণের পক্ষে ক্ষতিকট। অন্য রুমে রাখা বীজ গুলো ভালোভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছিল। পরীক্ষাটি স্টকহলমের ক্যারোলিনস্কা ইন্টিটিউটের বিশিষ্ট গবেষক ওলে জোহানসন বেলজিয়ান অধ্যাপক মারি-ক্লেয়ার কামার্তকে সাথে নিয়ে পুনরায় করতে চেয়েছেন।
WLAN এর মাধ্যমে ওয়াই-ফাইকে কানেক্ট করা হয়। এর সিগন্যাল শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ ওয়াই-ফাই সংযোগ করতে কোন ক্যাবলের প্রয়োজন হয় না।
১. মনোযোগের সমস্যা
২. ঘুমের সমস্যা
৩. কানে ব্যাথা
৪. ক্লান্তি
৫. মাথা ব্যাথা
৬. ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এবং
৭. হৃদরোগ।
১. যখন ওয়াই-ফাই ব্যবহার না করি তখন ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখা।
২. ঘুমানোর সময় ওয়াই-ফাইয়ের সুইচ বন্ধ রাখা এবং মোবাইল ফোন নিজেদের শরীর থেকে দূরে রাখা অথবা ফোন বন্ধ করে রাখা।
৩. বেডরুম বা রান্নাঘরে ওয়াই-ফাইয়ের রাউটার না বসানো।
৪. কখনও কখনও ক্যাবলের সাহায্যে ফোন ব্যবহার করা।
৫. গর্ভাবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহারে সচেতন হওয়া।
আমরা যত আধুনিক হচ্ছি ততবেশী আমরা প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। ফলে আমাদের শরীরেও বাসা বাধছে মরণঘাতী সব রোগ।
বর্তমান পৃথিবীতে যেহেতু প্রযুক্তি ছাড়া চলা সম্ভব নয়। তাই এর ক্ষতিকর প্রভাব যাতে কমানো যায় এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সব সময় আমাদের মনে রাখতে হবে নিজেদের অর্থ খরচ করে আমরা বাড়িতে নিজেদের মৃত্যুকেই নিয়ে আসছি নাতো?
ওয়াই-ফাই যতক্ষণ চালু থাকে ততক্ষনই এ থেকে ক্ষতিকর রেডিয়েশন বিকিরণ হতে থাকে। তাই দরকার না হলে সুইচ বন্ধ রাখা এবং প্রতিদিন ঘুমানোর আগে মনে করে সুইচ বন্ধ করা। তা না হলে বিপদজনক এ রেডিয়েশন ধীরে ধীরে নষ্ট করে দিতে পারে আমাদের মস্তিষ্ককে। সুতরাং সময় থাকতে আমরা ওয়াই-ফাইর ক্ষতিকর প্রভাব সর্ম্পকে জানি এবং নিজেদের ওয়াই-ফাইয়ের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করি।
মন্তব্য লিখুন