এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী সম্পর্কে মানুষের কৌতুহলের কমতি কখনই ছিল না ৷ যুগের পর যুগ এ সম্পর্কে রচিত হয়েছে শতশত গল্প ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। কিন্তু সত্যিই কি আছে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী? এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? আজ আমরা এসকল প্রশ্নের উত্তর সন্ধান করবো এবং পবিত্র কুরআনের আলোকে এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম এর অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী কি?
বহির্জাগতিক প্রাণ বা ভিনগ্রহের প্রাণী (এলিয়েন নামেও অতি পরিচিত) বলতে সেই জীবদের বোঝানো হয়, যাদের উদ্ভব এই পৃথিবীতে হয়নি বরং পৃথিবীর বাইরে মহাবিশ্বের অন্য কোথাও হয়েছে।পৃৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে বলে অনেক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন। আর তাদের এই দাবি নিয়ে বেশ বিতর্কও রয়েছে।
বর্হিজাগতিক প্রাণের অস্তিত্বের কথা বর্তমানে কেবল কাল্পনিক। কারণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে এ পর্যন্ত কোন জীব অথবা অতি হ্মুদ্র জীবাণু আছে বলে, পরিষ্কার কোন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবুও বিজ্ঞানীদের একটি বিরাট অংশ বিশ্বাস করেন যে, এদের অস্তিত্ব রয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের সাইন্স ফিকশন মুভিতে আমরা ভিনগ্রহের প্রানী সম্পর্কে জানতে পারি৷ আসলেই কি তাহলে ভিন্ন গ্রহের প্রানী আছে? সঠিক উত্তর জানতে হলে গভীর মনোযোগ দিয়ে আমাদের আরও একটু সামনে এগোতে হবে।
কল্পনা শক্তিও অনেক সময় বাস্তবতায় রূপ নিতে পারে৷ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দিন দিন নতুন নতুন চমক আমাদের উপহার দিয়েই চলছে। হয়তো আমরা একদিন বিজ্ঞানের কল্যানে ভিনগ্রহের প্রাণীর দেখাও পেতে পারি।
এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম ও পবিত্র কোরআনে কি উল্লেখ আছে?
মহা পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআনে প্রায় সাহস্রাধিক বৈজ্ঞানিক আয়াত রয়েছে। আমরা আজ বিজ্ঞানের কল্যানে যা জানতে পারছি, তা প্রায় সবই পবিত্র কোরআনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাড়ে চৌদ্দশো বছর আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বিজ্ঞানীরা ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েনের অস্তিত্ব আবিষ্কারের চেষ্টায় নিরলসভাবে গবেষণা করে যাচ্ছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ভিনগ্রহের প্রানী বা এলিয়েন সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে মাজীদে একটি আয়াতে যেন ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
যেমন পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
“এই আসমান ও যমীনের সৃষ্টি এবং এ দু’জায়গায় তিনি যেসব প্রাণীকুল ছড়িয়ে রেখেছেন এসব তাঁর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত৷ যখন ইচ্ছা তিনি এদেরকে একত্র করতে পারেন৷” [সূরা শূরাঃ ২৯]
এবার আসুন এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম এর অবস্থান তুলে ধরার জন্য আমরা সরাসরি উক্ত আয়াতের তাফসীরে লক্ষ্য করি৷
সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (রহ.) এর তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে-
“অর্থাৎ যমীন ও আসমান উভয় স্থানেই৷ জীবনের অস্তিত্ব যে শুধু পৃথিবীতেই নয়, অন্য সব গ্রহেও প্রানী ও প্রাণধারী সত্তা আছে এটা তার সুস্পষ্ট ইংগিত৷তিনি যেমন তাদের ছড়িয়ে দিতে সক্ষম তেমনি একত্র করতেও সক্ষম৷ তাই কিয়ামত আসতে পারে না এবং আগের ও পরের সবাইকে একই সময়ে উঠিয়ে একত্রিত করা যেতে পারে না এ ধারণা মিথ্যা৷” [তাফহীমুল কুরআন]
ইবনে কাসীর (রহ.) তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেন-
“আল্লাহ তা’আলা স্বীয় শ্রেষ্ঠত্ব, ক্ষমতা ও আধিপত্যের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনিই এবং এতোদুভয়ের মধ্যে যত কিছু ছড়িয়ে রয়েছে সবই তিনি সৃষ্টি করেছেন। ফেরেশতা, মানব, দানব এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রাণী, যেগুলো প্রান্তে প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে, কিয়ামতের দিন তিনি এসবকে একই ময়দানে একত্রিত করবেন, সেদিন তিনি তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করবেন।”[ইবনে কাসীর]
এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে ইসলামের অবস্থান আমি পরিস্কার মনে করি। বিশ্ব বিখ্যাত অনেক স্কলারগণ এ সম্পর্কে ইসলামের পজিটিভ দিক ব্যাখ্যা করেছেন৷ যেমন-
ডা. জাকির নায়েক স্যার কে, এক ভারতীয় ভাই প্রশ্ন করেছিল, ” আল-কুরআনে বিজ্ঞানের এমন কোনো তথ্য রয়েছে কি, যা এখনো আবিষ্কার হয়নি?”
“প্রশ্নের উত্তরে তিনি কুরআনের আয়াত এবং বেশ কিছু তথ্য উল্লেখ করেন। তিনি সূরা আশ-শূরার উক্ত আয়াতটি উল্লেখ করে স্পষ্ট ভাবেই বলেছিলেন, এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী রয়েছে। যা হয়তো বিজ্ঞান ভবিষ্যতে আবিষ্কার করবে৷ আর বিজ্ঞান আবিষ্কার করতে সক্ষম না হলেও পবিত্র কুরআন বলছে পৃথিবী ছাড়াও প্রানের অস্তিত্ব রয়েছে। সুতরাং এটা সত্য, আমি বিশ্বাস করি।” [পিস টিভির লেকচার দ্রষ্টব্য]
এলিয়েন বা পৃথিবী ছাড়া প্রানের অস্তিত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আরো বেশ কিছু আয়াত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
যেমন পবিত্র কুরআনে আরও বলা হয়েছে-
“আল্লাহ সেই সত্তা যিনি সাত আসমান বানিয়েছেন এবং যমীনের শ্রেণী থেকেও ঐগুলোর অনুরূপ৷ঐগুলোর মধ্যে হুকুম নাযিল হতে থাকে৷ (এ কথা তোমাদের এ জন্য বলা হচ্ছে) যাতে তোমরা জানতে পার, আল্লাহ সব কিছুর ওপরে ক্ষমতা রাখেন এবং আল্লাহর জ্ঞান সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে আছে৷” [সূরা তালাকঃ ১২]
আসুন আয়াতের তাফসীরে লক্ষ্য করা যাকঃ
“ঐগুলোর অনুরূপ” কথাটির অর্থ এ নয় যে, যতগুলো আসমান বানিয়েছেন যমীনও ততগুলোই বানিয়েছেন ৷ বরং এর অর্থ হলো, তিনি বহুসংখ্যক আসমান যেমন বানিয়েছেন তেমনি বহুসংখ্যক যমীনও বানিয়েছেন ৷ আর যমীনের শ্রেনী থেকেও কথাটার অর্থ হচ্ছে, যে পৃথিবীতে মানুষ বাস করছে সেই পৃথিবী যেমন তার ওপর বিদ্যমান সব কিছুর জন্য বিছানা বা দোলনার মত ঠিক তেমনি আল্লাহ তা’আলা এই বিশ্ব-জাহানে আরো অনেক যমীন বা পৃথিবী বানিয়ে রেখেছেন যা তার ওপর অবস্থানকারী সবকিছুর জন্য বিছানা ও দোলনার মত ৷
এমন কি কুরআনের কোন কোন স্থানে এ ইংগিত পর্যন্ত দেয়া হয়েছে যে, জীবন্ত সৃষ্টি কেবল যে এই পৃথিবীতে আছে তাই নয়, বর উর্ধজগতেও জীবন্ত সৃষ্টি বা প্রাণী বিদ্যমান ৷ অন্য কথায় আসমানে যে অসংখ্য তারকা এবং গ্রহ-উপগ্রহ দেখা যায় তার সবই বিরাণ অনাবাদী পড়ে নেই ৷ বরং তার মধ্য থেকেও বহু সংখ্যক গ্রহ উপগ্রহ এমন আছে যা এই পৃথিবীর মতই আবাদ৷” [তাফহীমুল কুরআন]
প্রাচীনযুগের মুফাসসিরদের মধ্যে শুধুমাত্র ইবনে আব্বাস (রা.) এমন একজন মুফাসসির, যিনি সেই যুগে এই সত্যটি বর্ণনা করেছিলেন। ইবনে আব্বাস (রা.) কে স্বয়ং রাসূল (সা.) কোরআনের মুফাসসির হিসেবে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন। তাই এলিয়েন সম্পর্কে ইসলামের ব্যাখ্যা গ্রহণে ইবনে আব্বাস (রা.) এর বক্তব্য মহামূল্যবান।
তবে বহুবিদ মুফাস্সির এবং মুসলিম গবেষক থেকেও এ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। মূলত তারা মহান আল্লাহর এই বিশ্বজগতের সৃষ্টি সম্পর্কে গভীর চিন্তা করেছিলেন ৷ তাই তাঁরাও ইবনে আব্বাস (রা) এর সূত্র ধরে ভিনগ্রহের প্রানী সম্পর্কে যেন পজিটিভ দৃষ্টি ব্যাখ্যা করেছিল।
কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ্যনিয়, যেহেতু রাসূল (সা.) এ বিষয়ে (এলিয়েন) তেমন কিছু আলোচনা করেননি। তাই ইবনে আব্বাস (রা.) ব্যতিত অন্য কোনো সাহাবীরা এ সম্পর্কে তেমন কোন স্পষ্ট মন্তব্যও করেননি।
আরও পড়ুনঃ রাসূল (সা:) এর জন্মদিন ১২ নাকি ৯ রবিউল আউয়াল
তবে আমরা পবিত্র কুরআনের আয়াত থেকে পৃথিবী ছাড়াও যে প্রানের অস্তিত্ব রয়েছে, তা নিয়ে একটি স্পষ্ট তথ্য দেখতে পাচ্ছি। অর্থাৎ এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম একটি স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরেছে বলা যেতে পারে। তাই এ বিষয় নিয়ে অন্তত সন্দেহ পোষন করা কোনো ইমানদার ব্যক্তির লক্ষ্যন হতেই পারে না৷
যা বললাম নিজের মনগড়া বক্তব্য নয়, এ বিষয়টি উক্ত আয়াতের তাফসিরে ঠিক এভাবে প্রতীয়মান হয়েছে-
{“প্রাচীনযুগের মুফাসসিরদের মধ্যে শুধুমাত্র ইবনে আব্বাসই (রা) এমন একজন মুফাসসির যিনি সেই যুগেও এই সত্যটি বর্ণনা করেছিলেন , যখন এই পৃথিবী ছাড়া বিশ্ব-জাহানের আর কোথাও বুদ্ধিমান শ্রেনীর মাখলুক বাস করে এ কথা কল্পনা করতেও কোন মানুষ প্রস্তুত ছিল না ৷ বর্তমানেও যেখানে এই যুগের অনেক বৈজ্ঞানিক পর্যন্ত এর সত্যতা বাস্তবতা সম্পর্কে সন্দিহান সে ক্ষেত্রে ১৪শত বছর পুর্বের মানুষ একে (ভিন গ্রহে প্রানের অস্তিত্ব) সহজেই কিভাবে বিশ্বাস করতে পারত ৷ তাই ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু সাধারণ মানুষের সামনে এ কথা বলতে আশংকা করতেন যে, এর দ্বারা মানুষের ঈমান নড়বড়ে হয়ে না যায় ৷ মুজাহিদ বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর এ আয়াতের অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ “আমি যদি তোমাদের কাছে এ আয়াতের ব্যাখ্যা পেশ করি তাহলে তোমরা কাফের হয়ে যাবে ৷ তোমাদের কুফরী হবে এই যে, তোমরা তো বিশ্বাস করবে না, মিথ্যা বলে গ্রহণ করবে ” ৷ সাঈদ ইবনে যুবায়ের থেকেও প্রায় অনুরূপ বক্তব্য উদ্ধৃত হয়েছে ৷ তিনি বলেন ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছেন, “আমি যদি তোমাদেরকে এর অর্থ বলি তাহলে তোমরা কাফের হয়ে যাবে না এমন আস্থা কি করে রাখা যায় ” ৷ (ইবনে জারীর, আবদ ইবনে হুমায়েদ) তা সত্ত্বেও ইবনে জারীর, ইবনে আবী হাতেম, ও হাকেম এবং বায়হাকী শুয়াবুল ঈমান ও কিতাবুল আসমা ওয়াস সিফাত গ্রন্থে আবুদ দোহার মাধ্যমে শাব্দিক তারতম্য সহ ইবনে আব্বাস বর্ণিত এই তাফসীর উদ্ধৃত করেছেন যে-
“ঐ সব গ্রহের প্রত্যেকটিতে তোমাদের নবীর (সা.) মত নবী আছেন, তোমাদের আদমের (আ.) মত আদম আছেন, নূহের (আ.) মত নূহ আছেন, ইবরাহীমের (আ.) মত ইবরাহীম আছেন এবং ঈসার (আ.) মত ঈসা আছেন ” ৷ ইবনে হাজার (রহ.) তাঁর ফাতহুল বারী গ্রন্থে এবং ইবনে কাসীর তাঁর তাফসীরেও এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন ৷ ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেছেন যে, এর সনদ বিশুদ্ধ ৷ তবে আমার জানা মতে, আবুদ দোহা ছাড়া আর কেউ এটি বর্ণনা করেননি ৷ তাই এটি বিরল ও অপরিচিত হাদীস ৷ অপর কিছু সংখ্যক আলেম একে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করেছেন ৷ মোল্লা আলী কারী তাঁর “মাওদুয়াতে কাবীর”গ্রন্থে (পৃষ্ঠা-১৯ ) একে বানোয়াট বলে উল্লেখ করে লিখেছেন, এটি যদি খোদ ইবনে আব্বাসের বর্ণিত হাদীসও হয়ে থাকে তবুও তা ইসরাঈলী পৌরণিকতার অন্তরভুক্ত ৷ তবে প্রকৃত সত্য ও বাস্তব হলো, মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধির অগম্যতাই এটিকে প্রত্যাখ্যান করার মূল কারণ ৷ অন্যথায় এর মধ্যে যুক্তি ও বিবেক বুদ্ধি বিরোধী কোন কথাই নেই ৷ এ কারণে আল্লামা আলুসী এ বিষয়ে তাঁর তাফসীরে আলোচনা করতে গিয়ে লিখছেনঃ বিবেক বুদ্ধিও শরীয়াতের দৃষ্টিতে এ হাদীসটি মেনে নিতে কোন বাধা নেই ৷ এ হাদীসের অর্থ দাঁড়াচ্ছে, প্রত্যেক যমীনে একটি মাখলুক আছে ৷ তারা একটি মূল বা উৎসের সাথে সম্পর্কিত -এই পৃথিবীতে আমরা যেমন আমাদের মূল উৎস আদম আলাইহিস সালামের সাথে সম্পর্কিত ৷ তাছাড়া প্রত্যেক যমিনে এমন কিছু ব্যক্তিবর্গ আছেন যাঁরা সেখানে অন্যদের তুলনায় বৈশিষ্টমন্ডিত যেমন আমাদের এখানে নূহ ও ইবরাহীম আলাইহিস সালাম বৈশিষ্টমন্ডিত ৷ তিনি আরো বলেনঃ হয়তো যমীনের সংখ্যা সাতের অধিক হবে এবং অনুরূপভাবে আসমানও শুধু সাতটিই হবে না ৷ সাত একটি পূর্ণ বা অবিভাজ্য সংখ্যা ৷ এ সংখ্যাটি উল্লেখ করায় তার চেয়ে বড় সংখ্যা রহিত হয়ে যাওয়া অনিবার্য নয় ৷ তাছাড়া কোন কোন হাদীসে যেখানে এক আসমান থেকে অপর আসমানের মধ্যবর্তী দূরত্ব পাঁচ শত বছর বলা হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি বলেছেনঃ… অর্থাৎ এর দ্বারা হুবহু দূরত্বের পরিণাম বা মাপ বর্ণনা করা হয়নি ৷ বরং কথাটি যাতে মানুষের জন্য অধিকতর বোধগম্য হয় সে উদ্দেশ্যে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ৷
এখানে উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি আমেরিকার র্যাণ্ড কার্পোরেশন (Rand corporation) মহাশূণ্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে অনুমান করেছে যে, পৃথিবী যে ছায়াপথে অবস্থিত শুধু তার মধ্যেই প্রায় ৬০ কোটি এমন গ্রহ দেখা যায় আমাদের পৃথিবীর সাথে যার প্রাকৃতিক অবস্থার অনেকটা সাদৃশ্য আছে এবং সম্ভবত সেখানেও জীবন্ত মাখলুক বা প্রাণী বসবাস করছে ৷ (ইকনমিষ্ট, লন্ডন, ২৬ শে জুলাই , ৬৯ ইং) ৷}
[দেখুন তাফসিরে তাফহীমূল কুরআন সূরা তালাক ২৩নং টিকা]
আমরা জানি না, বিজ্ঞান কোনোদিন ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন প্রমাণ করতে পারবে কি না। তবে পবিত্র কুরআনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পৃথিবী ছাড়াও প্রানের অস্তিত্ব কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ইমানদার ব্যক্তি উক্ত আয়াত বিশ্বাস করবেই।
একটি কথা, বিজ্ঞান যে সব কিছু প্রমান করতে পারবে, এমন কোনো কথা নেই। তাই প্রত্যেক মুসলিমের এ কথা জেনে রাখা উচিত, “বিশ্বের সমস্ত গবেষণা যদি কোনো বিষয় কে ভুল প্রমান করে, কিন্তু পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদিস বলে অন্য কথা৷ তবেও আল্লাহর বানী মহাসত্য, বিজ্ঞানের সমস্ত গবেষণা ভুল।”
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“এটা সে কিতাব; যাতে কোন সন্দেহ নেই। মুত্তাকীদের জন্য হেদায়েত।” [সূরা বাকারাঃ ০২]
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হলো, তোমার বা আমার কোনো বিষয় বুঝে আসুক আর নাই বা আসুক। পবিত্র কোরআন যা বলেছে তাই সঠিক, অকাট্য চিত্ততে তা বিশ্বাস করতেই হবে৷ যদি বিশ্বাস না হয় কিন্বা সন্দেহ পোষন করা হয়, তবে সে কাফির হয়ে যাবে।
সুতরাং আমরা এলিয়েন সম্পর্কে ইসলাম ও পবিত্র কুরআনের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এবং এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি- আল্লাহর বানী সত্য, এলিয়েন বা ভিন গ্রহে প্রাণীর অস্তিত্ব থাকাও সত্য।সর্বোপরি বলতে চাই-
মহান আল্লাহ বিশ্বজাহানের সবকিছুর স্রস্টা, প্রকৃত সত্য তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন।
তথ্য সহায়তাঃ
- উইকিপিডিয়া
- তাফসীরে ইবনে কাসীর ও তাফহীমুল কুরআন
oshadharon
Thanks
মাশাল্লাহ ভাই। তুমি খুব সুন্দর হবে আলোচনা তুলে এনেছ আমাদের মাঝে। আল্লাহ তোমাকে নেক হায়াত দান করুক।(আমিন)
আলহামদুলিল্লাহ, প্রিয় ভাই। মহান আল্লাহ আপনাকেও প্রতিদান/উত্তম হায়াত দান করুক৷ আমিন।
আমিন
খুবই সুন্দর হয়েছে ভাইইই,,,🙂🙃