ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের অন্যতম আলোড়ন সৃষ্টিকারী উদ্ভাবনের নাম “ডিজিটাল মার্কেটিং”; যা “ইন্টারনেট মার্কেটিং”, “অন-লাইন মার্কেটিং”, “সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং”, “ওয়েব-মার্কেটিং” ইত্যাদি নামেও বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে।
অন-লাইন মার্কেটিং গ্রাহকের অভিজ্ঞতায় এমন অভাবনীয় পরিবর্তন এনেছে, যা প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থায় কল্পনারও অতীত ছিল। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোন প্রান্তের ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা ২৪/৭ সময়ে অতি সহজে পণ্য/সেবা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে।
ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবসায়ীদের ব্যবসা শুরু এবং পরিচালনা পদ্ধতি দ্রুত/সহজ করার সাথে সাথে গ্রাহকের সন্তুষ্টি বিধান তথা ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ অনন্য বৈশিষ্ট্যের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং অতিদ্রুত এবং ব্যাপক গ্রাহক-প্রিয়তা লাভ করেছে।
গ্রাহক ক্ষমতায়ণে ডিজিটাল মার্কেটিং
প্রচলিত মার্কেটিং ব্যবস্থা ছিল পুরোপুরি উৎপাদক ও বিক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে। গ্রাহকের চাহিদা কিংবা পছন্দের বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত। কেবলমাত্র বিক্রেতার মুনাফা লাভের লক্ষ্য নিয়ে পণ্য প্রস্তুত ও বাজারজাত করা হত।
বর্তমানে অন-লাইন মার্কেটিং ব্যবস্থার অবারিত এবং পর্যাপ্ত সুযোগ বিদ্যমান থাকায় দেশী-বিদেশী অগণিত উৎস থেকে গ্রাহকের চাহিদা পূরণের সহজ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ফলশ্রুতিতে গ্রাহক আর বিক্রেতার নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, বরং মার্কেটিং ব্যবস্থা গ্রাহকের নিয়ন্ত্রণে। গ্রাহকেরা আজ কোন ব্র্যান্ড কিংবা কোম্পানির ব্যবসায়িক সফলতার নিয়ামক হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে।
কোম্পানি কিংবা ব্র্যান্ডের সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে গ্রাহক-প্রিয়তা বা গ্রাহকের সন্তুষ্টির মাত্রার উপর। ডিজিটাল মার্কেটিং এর কল্যাণে “sellers market” –আজ “buyers market”-এ পরিবর্তিত হয়েছে, সাপ্লাই-চেইনে গ্রাহকের ভ্যালু বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলশ্রুতিতে কোম্পানিসমূহ নিত্য-নতুন “গ্রাহক-মুখী” কিংবা “গ্রাহক-কেন্দ্রিক” বিভিন্ন মার্কেটিং কৌশল নিয়ে গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে।
আমেরিকার বিশ্বখ্যাত মোটর প্রস্তুতকারী কোম্পানি একদা কেবলমাত্র কালো রংয়ের মোটরগাড়ি বিক্রি করতো; তাদের মার্কেটিং কৌশল ছিল “Any Color you wanted providing it was black”. কিন্তু গ্রাহকের ক্ষমতায়ণের ফলে আজ সে কোম্পানিকে টিকে থাকার জন্য গ্রাহকের চাহিদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হাজারো রংয়ের অজস্র নিত্য-নতুন মডেলের গাড়ি প্রস্তুত করতে হচ্ছে।
২০১৭ সালে “Consumers Aren’t Looking to Buy From Brands That Are “Cool” on Social” শিরোনামে প্রকাশিত Sprout Social Index এর এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায় সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বহুলাংশে গ্রাহকের প্রতি ব্র্যান্ডের দায়িত্বশীল আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়, ওয়েবসাইটের বাহ্যিক চাকচিক্য এক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে।
The Microsoft 2017 State of Global Customer Service Report অনুযায়ী ৭৭% গ্রাহক সে সকল ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্থ থাকে, যা তাদের মতামত এবং ফিড-ব্যাক গ্রহণ করে এবং গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয়।
“কনজ্যুমার ইজ কিং”
বর্তমান ডিজিটাল যুগে মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে গ্রাহক অত্যন্ত প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে থাকে; অনেকের মতে “কনজ্যুমার ইজ কিং”। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কাস্টমারের অনন্য গুরুত্ব প্রসংগে বিশ্বখ্যাত কোম্পানি HP এর প্রাক্তন সিইও জন ইয়ং বলেছেন “ব্যবসার আত্মা হল কাস্টমার। কাস্টমার ছাড়া কোন কোম্পানি কিংবা ব্যবসার আর্থিক চক্র অসম্পূর্ণ। কাস্টমারের অর্থ থেকে বিনিয়োগের রিটার্ন আসে, কর্মচারীদের বেতন আসে”।
বর্তমানে “কনজ্যুমার ইজ কিং” কনসেপ্টটি বহুল প্রচলিত এবং বেশ জনপ্রিয়, যা আসলে কাস্টমার রিলেশনশীপ ম্যানেজমেন্ট, কাস্টমার সার্ভিস- ২৪/৭ সার্ভিস প্রদান প্রভৃতির প্রতি গুরুত্ব আরোপকে নির্দেশ করে।
বিজনেসের জন্য গ্রাহক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সাথে সংবেদনশীল। এ মতবাদের মূলকথা হল কোন প্রতিষ্ঠানকে কাস্টমারমুখী হয়ে ব্র্যান্ড-কাস্টমার এর মধ্যে টেকসই সম্পর্ক স্থাপন ও উন্নয়নে যত্নশীল হতে হবে।
কোম্পানি কিংবা ব্র্যান্ডের মূল লক্ষ্য থাকতে হবে গ্রাহকের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যাবলী অর্জন করা। কিন্তু গ্রাহক ও ব্র্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তিসমূহ কি হবে তা নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
বিশ্বখ্যাত ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি KPMG তাদের Global Customer Experience Excellence report, 2019 রিপোর্টে গ্রাহক-ব্র্যান্ডের মধ্যকার টেকসই সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে নিম্নোক্ত ৬টি পিলার চিহ্নিত করেছেঃ
১) শুদ্ধাচার- বিশ্বাসযোগ্য হওয়া এবং গ্রাহকের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি করা;
২) সমস্যার দ্রুততম সমাধান- খারাপ অভিজ্ঞতাকে স্মরণীয় অভিজ্ঞতায় রুপান্তর করা;
৩) গ্রাহক চাহিদা-গ্রাহকের চাহিদা পূরণের সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ;
৪) সহানুভূতিশীলতা-গ্রাহকের পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় নিয়ে মানবিক আচরণ করা;
৫) ব্যক্তি-কেন্দ্রিকতা- গ্রাহকের প্রতি ব্যক্তিগতভাবে মনযোগ প্রদান;
৬) দ্রুত এবং সহজ সেবা- সহজ পদ্ধতি চালু করে গ্রাহকের সময় সাশ্রয় ও শ্রম লাঘব করা।
গ্রাহক অসন্তুষ্টির ক্ষতিকর প্রভাবঃ
কোন ব্র্যান্ড/কোম্পানির প্রতি গ্রাহক অসন্তুষ্টির কারণে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে প্রতিফলিত হয়েছে হ্যাপি গ্রাহকেরা তাদের ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা দু’চারজনের কাছে শেয়ার করে, পক্ষান্তরে আন-হ্যাপি গ্রাহকেরা তাদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা অধিক সংখ্যকের কাছে শেয়ার করে। সহজে দৃশ্যমান নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াসমূহ নিম্নরুপঃ
নেতিবাচক রিভিঊঃ
অসন্তুষ্ট গ্রাহকেরা সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের ওয়েবপেজে এমনকি নিজেদের বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া পেজেও ব্র্যান্ড সম্পর্কে নেগেটিভ বা ঋনাত্মক রিভিউ/ফিড প্রদান করে থাকে। পরিণতিতে বিদ্যমান গ্রাহক এবং অনাগত গ্রাহকের মনে ব্র্যান্ড সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে।
লীড জেনারেশন/কনভার্সনের নিম্নতর হারঃ
অসন্তুষ্ট গ্রাহকেরা সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা ক্রয়ে অন্যান্যদের মোটেও উৎসাহিত করে না। নতুন গ্রাহকেরা কোন ব্র্যান্ড সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা লাভ করিলে তারা মোটেও সে ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা ক্রয়ে আগ্রহী হয় না। ফলে গ্রাহক সৃষ্টিতে সোস্যাল মিডিয়ার অনন্য সুবিধা থেকে ব্র্যান্ড বঞ্চিত হয়।
গ্রাহক হ্রাসঃ
গ্রাহক অসন্তুষ্টির সংবাদ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। অসন্তুষ্ট গ্রাহকেরা সাধারণত পুনঃক্রয়ে অনাগ্রহী হয়। অধিকন্তু নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সন্মুখীন না হওয়া গ্রাহকেরাও সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা ক্রয় বর্জন করতে পারে। পরিণতিতে ব্র্যান্ডের গ্রাহক ব্যাপক হারে হ্রাস পায়।
বিক্রিতে ধ্বস নামাঃ
অসন্তুষ্ট গ্রাহক নিজে ব্র্যান্ডের পণ্য ক্রয়ে বিরত থাকে, তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অন্যান্য গ্রাহকেরা ব্র্যান্ডের উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, নতুন গ্রাহকেরা ব্র্যান্ডের প্রতি অনাগ্রহী হয়। ফলে ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা বিক্রিতে ধ্বস নামে, আয় ও মুনাফা হ্রাস পেয়ে ব্র্যান্ডটি আর্থিকভাবে অলাভজনক হয়ে পড়ে।
কর্মীদের চাকরী পরিত্যাগঃ
গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জন ব্র্যান্ডের কর্মচারীদের অন্যতম দায়িত্ব। কিন্তু গ্রাহকেরা কোন কারণে কোন ব্র্যান্ডের প্রতি অসন্তুষ্ট কিংবা বিরক্ত হলে তাদেরকে খুশী করার কাজটি অত্যন্ত দুঃরহ হয়ে পড়ে। কোম্পানির কর্ম-পরিবেশ জটিল এবং কঠিন হয়ে উঠে। ফলে বিশ্বস্ত কর্মচারীগণও কোম্পানীর ভবিষ্যত সম্পর্কে হতাশাগ্রস্ত হয়ে কোম্পানি পরিত্যাগ করে চলে যায়।
আন-হ্যাপি গ্রাহকঃ
অসন্তুষ্ট গ্রাহকেরা ধীরে ধীরে আন-হ্যাপি গ্রাহক হয়ে উঠে। ফলে ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা ক্রয়ের অভিজ্ঞতা সুখকর থাকে না। পরিণতিতে ব্র্যান্ডের সাথে গ্রাহকের সম্পর্ক বিনষ্ট হয়, গ্রাহক ব্র্যান্ড বর্জন করে।
গ্রাহককে কিভাবে খুশী করবেন?
ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রাহককে খুশী রাখা একটি উইন-উইন পদক্ষেপ। যা গ্রাহকের ক্রয়ের অভিজ্ঞতা আনন্দময় ও সুখকর করার পাশাপাশি কোম্পানির ব্যবসায়িক সফলতা অর্জনে সহায়ক হয়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গবেষক ও বিশেষজ্ঞগণ গ্রাহককে খুশী করার অজস্র কৌশল প্রস্তাব করেছেন। নিম্নে কতিপয় প্রচলিত এবং বহুল ব্যবহ্রত কৌশল উল্লেখ করা হলঃ
গ্রাহকের ফিড-ব্যাকঃ
কোন ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা সম্পর্কিত যেকোন তথ্যাদি যেমন গুণগত মান, ডেলিভারী, রিফান্ড পলিসি ইত্যাদি সহজে পাওয়া কিংবা বিক্রয়োত্তর সেবা সংক্রান্ত গ্রাহকের যেকোন জিজ্ঞাসার জবাব প্রদানের কার্যকর এবং সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা চালু করতে হবে। পণ্য/সেবার মান কিংবা গ্রাহক সেবা সংক্রান্ত গ্রাহকের যেকোন পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ওয়েবপেজে “কমেন্ট বাটন” সংযোগ, অন-লাইন সার্ভ ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকতে পারে।
গ্রাহক মতামতের মূল্যায়ণঃ
গ্রাহকের মতামত গ্রহণের ব্যবস্থা থাকাই যথেষ্ট নয়। গ্রাহকের মতামতের ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে।
গ্রাহক অভিযোগ নিষ্পত্তিঃ
গ্রাহকের মনে ব্র্যান্ড সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির অন্যতম উপায় হল গ্রাহকের যেকোন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুততম সময়ে সাড়া দেয়া। এ লক্ষ্যে নির্ধারিত জনবল নিয়োজিত করে তাদেরকে গ্রাহক অভিযোগ নিষ্পত্তির সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
নেতিবাচক মতামতকে গুরুত্ব প্রদানঃ
নেতিবাচক মন্তব্যকে মুছে না ফেলে কিংবা এড়িয়ে না গিয়ে তার জবাব/সমাধান দেয়া সমীচীন। যার মাধ্যমে অসন্তুষ্ট গ্রাহকের মনেও ইতিবাচক মনোভাবে তৈরি হয়। অধিকন্তু সন্তুষ্ট গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস অধিকতর জোরদার হয়।
ফলো-আপ কার্যক্রম চালুঃ
গ্রাহকের কোন অভিযোগ নিষ্পত্তি কিংবা মতামতের ভিত্তিতে কার্যক্রম গ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করা সমীচীন নয়। বরং কোম্পানির গৃহীত পদক্ষেপের ভিত্তিতে গ্রাহক সন্তুষ্ট কিনা কিংবা অধিকতর সহায়তা/সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তা জানতে চাওয়া উত্তম। এ ধরণের পদক্ষেপ গ্রাহকের সাথে ব্র্যান্ডের টেকসই এবং উন্নত সম্পর্ক স্থাপনে অত্যন্ত সহায়ক হয়।
গ্রাহককে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করাঃ
পণ্য/সেবার গুণগত মান কিংবা বিক্রয়োত্তর সেবা বা অন্যান্য বিষয়ে গ্রাহককে দেয় প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে রক্ষা করতে হবে। প্রতিশ্রুতির যে কোন ধরণের বরখেলাপ ক্রেতার মনে সন্দেহ/ অনাস্থা তৈরি করতে পারে। ফলে ব্র্যান্ডের প্রতি ক্রেতার আস্থাহীনতা সৃষ্টি তথা ক্রেতাকে ব্র্যান্ডের পণ্য/সেবা বর্জনে প্ররোচিত করতে পারে।
গ্রাহকের প্রতি সদাচারণ করাঃ
গ্রাহক সবসময় প্রত্যাশা করে বিক্রেতা তাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করবে, ভালো আচরণ করবে। গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে গ্রাহকের সাথে সদাচারণ করা, সম্ভব হলে প্রত্যাশার চেয়েও বেশী দিতে চেষ্টা করা উত্তম।
ইনোভেটিভ বা সৃজনশীল হওয়াঃ
ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তির নিরন্তর পরিবর্তনের সাথে সাথে গ্রাহকেরও পছন্দ এবং চাহিদাও প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। পুরাতণ গ্রাহক ধরে রাখা এবং নতুন নতুন গ্রাহককে আকর্ষণের লক্ষ্যে নিত্য নতুন সৃজনশীল পণ্য/সেবা বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
গ্রাহকের সাথে ব্যাক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলাঃ
বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয়েছে চমকপ্রদ, ব্যয়-বহুল বিজ্ঞাপণের থেকে গণ-যোগাযোগ অধিকতর কার্যকর। বিভিন্ন ধরণের লয়ালটি প্রোগ্রাম কিংবা রি-ওয়ার্ড পয়েন্ট অফার করে গ্রাহকের সাথে ব্র্যান্ডের কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব।
উন্নত গ্রাহক সেবাঃ
ব্যবসার মূল লক্ষ্য পণ্য/সেবা বিক্রয় করা। ক্রেতা কিংবা গ্রাহকের অস্তিত্ব না থাকিলে ব্যবসা টিকে থাকার কোন সুযোগ নেই। টেকসইভাবে ব্যবসা পরিচালনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রাহককে সর্বোত্তম সেবা প্রদান অপরিহার্য্য। এক্ষেত্রে গ্রাহকের যেকোন ধরণের অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে Donald Porter পাওয়ার অব 5W’s ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন; অর্থাৎ Who? What? Where? When? Why?
অধিকাংশ ব্র্যান্ড/কোম্পানি বিপুল ব্যয়ে পণ্য/সেবার প্রচারণা চালায়, কিন্তু গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের বিষয়টিতে তেমন গুরুত্ব দেয় না। অথচ ব্যবসার মুল উদ্দেশ্য পণ্য/সেবা বিক্রির মাধ্যমে মুনাফা অর্জন, যা সম্পূর্ণভাবেই গ্রাহকের উপর নির্ভরশীল। ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণের সার্থেই গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন অপরিহার্য্য।
তথ্যসূত্র-
- https://www.socialmediaexaminer.com/how-consumers-respond-to-brands-on-social-media-new-research/
https://www.socialmediaexaminer.com/5-ways-brands-can-influence-consumer-purchasing-decisions/ - https://www.socialmediaexaminer.com/rethinking-the-customer-journey-a-strategy-for-marketers/
- https://businesswise.in/roundup/details/487/Customer-is-King-What-it-means-in-Todays-Market
- https://www.mbaskool.com/business-articles/marketing/4569-customer-is-king-make-the-king-happy.html
- https://www.formpl.us/blog/customer-dissatisfaction#:~:text=Customer%20dissatisfaction%20has%20far%2Dreaching,term%20impact%20on%20your%20brand