সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল আপিল বিভাগ বসছে সপ্তাহের পাঁচ দিনই। গত রবিবার ১৯ জুলাই ২০২০ থেকে চালু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহের রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার বসবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এ বিষয়ে গত শনিবার ১৮ জুলাই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশে আবারও বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল আপিল বিভাগ
গত ১৪ জুলাই একই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। ওই বিজ্ঞপ্তিতেও ১৯ জুলাই থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন ছাড়া সপ্তাহে পাঁচ দিন আপিল বিভাগ বসার কথা বলা হয়। এরও আগে গত ১১ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, সপ্তাহে দুদিন সোম ও বৃহস্পতিবার বসবে আপিল বিভাগ। এই নির্দেশনার পরদিন ১২ জুলাই রবিবার ও ১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার বসেছিল আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০
আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোঃ বদরুল আলম ভূঁঞার স্বাক্ষরে শনিবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রধান বিচারপতি দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০ এবং অত্র কোর্ট কর্তৃক প্রণীত প্র্যাকটিস ডিরেকশন অনুসরণ করতে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে স্বাভাবিক বিচারকার্য পরিচালিত হবে মর্মে অনুমোদন প্রদান করেছেন’।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ এর অর্জন ও উন্নয়ন কার্যক্রম
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল কোর্টে আগামী ১৯ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সপ্তাহের রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত শুনানি গ্রহণ করা হবে। এই দিনগুলোতে সুপ্রিম কোর্টের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
সর্বশেষ গত ১২ মার্চ সশরীরে বসেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। পরদিন ১৩ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় অবকাশকালীন ছুটি। এই ছুটি শেষ হওয়ার আগেই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে।
এ অবস্থায় গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে নিয়মিত আদালত বন্ধ হয়ে যায়। এ প্রেক্ষাপটে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে গত ৯ মে আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ নামে গেজেট প্রকাশ করে।
ওই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আদালতকে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি আলোয় আলোকিত বাংলাদেশ
পরদিন ১০ মে সুপ্রিম কোর্টসহ সারা দেশে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ এবং আইনজীবীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করা হয়।
এরপর ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে শুধু সীমিত আকারে নির্দিষ্ট কিছু আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। পরে ৩০ মের পর আদালতের সংখ্যা ও এখতিয়ার বাড়ানো হয়েছে।
এর পর থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতসহ সারা দেশে আদালতগুলোতে নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তথ্যসূত্রঃ কালের কণ্ঠ ছবিঃ সংগৃহীত